বিরামপুর(দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের বিরামপুরে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন করছে ১৭ বছরের এক স্কুলছাত্রী। তবে ঘরে তালা দিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন প্রেমিক সাকিবসহ (২১ ) তার পরিবারের লোকজন।
রোববার (১ অক্টোবর) রাত থেকে উপজেলার জোতবানী ইউনিয়নের টেগরা (তকিপুর) গ্রামের মতিয়ার রহমানের বাড়িতে অনশনে বসে ওই কিশোরী, সাকিব মতিয়ারে ছেলে। রোববার রাতে বাড়ি থেকে মেয়েটিকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয় প্রেমিক সাকিবসহ পরিবারের লোকজন। পরে স্থানীয়রা ২ নং ওর্য়াড সদস্য সাহানুর আলম এর বাসায় নিয়ে যায় ও তার পরিবারের জিম্মায় দেন।
জানা যায়, দুই বছর আগে চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার নবম শ্রেণীতে পড়ুয়া স্কুলছাত্রী পিংকি (১৭) সঙ্গে ফোনে পরিচয় হয় প্রেমিক সাকিবের সাঙ্গে। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। চলতি বছরের (২৯ র্মাচ) অনশনে বসা ঐ স্কুলছাত্রীর প্রাপ্ত বয়স না হওয়ায় পরে বিয়ে দেওয়ার অঙ্গিকারনামা করে বাসায় পাঠিয়ে দেন ছেলেসহ পরিবারের লোকজন।
এ নিয়ে ওই স্কুলছাত্রীর দাদি জানান, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ছেলের বাবা মতিয়ার রহমান তাদের বাসায় যায় এবং পরিবারের সমস্যার কথা বলে ১০ হাজার টাকা নেন। ঈদের সময় হওয়ায় র্মাকেটসহ বিভিন্ন বাজার ও করে নেন।ছেলের বাবা বলে তাদের প্রাপ্ত বয়স হলেই বিয়ে দিবেন বলে আশ্বাস দেন। পেমিকা মেয়ে এলাকাবাসী সহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ওর্য়াড সদস্যর কাছে সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
অনশনে বসা কিশোরী বলে, ‘ সাকিবের সঙ্গে আমার দুই বছরের প্রেম। সে একাধিকবার আমার সঙ্গে ভিডিও কলে অপত্তিকর অবস্থায় কথা বলতে আমাকে বাধ্য করে। তার কাছে আমার কিছু অপত্তিকর ছবি আছে সেই ছবি দিয়ে আমাকে বিভিন্ন প্রকার ভয় ভিতি ও হুমকি দিয়ে আসছিল। কয়েক দিন আগে সাকিব আমাকে তার বাড়িতে আসতে বলে কিন্তু আমি শারীরিক ভাবে অসুস্থ থাকায় আসতে পারিনি এখন এসেছি কিন্তু সে এখন বিয়ে করতে চাচ্ছে না। সে আমাকে ফোন করে বাড়িতে ডেকেছে। আমি আসার পর সাকিবের মা-বাবা আমার ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন। তখন রাত হওয়ায় স্থানীয়রা সাহানুর আলম ইউপি সদস্যর বাসায় আমাকে নিয়ে যায়। সাকিব আর তার বাড়ির লোকজন সবাই লাপাত্তা। সে যদি আমাকে বিয়ে না করে তাহলে আত্মহত্যা করবো। এছাড়া আমার কোনো উপায় নাই।’
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে সমঝোতার চেষ্টা করা হচ্ছে।
জোতবানী ইউনিয়নের ২ নং ওর্য়াড সদস্য সাহানুর আলম জানান, আমি গতকাল শালার বিয়েতে ছিলাম। আমি না থাকায় স্থানীয়রা পিংকি কে আমার পরিবারের জিম্মায় রাখেন। পরে তার থেকে সব কিছু শোনার পর ছেলের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেস্টা করলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে প্রেমিক সাকিবসহ পরিবারের লোকজনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেস্টা করলে তাদের ফোন বন্ধ থাকায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
জোতবানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক জানান, মেয়েটির প্রাপ্য বয়স না হওয়ার কারণে বিয়ে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আমি মেয়ের অবিভাবককে এখানে আসার জন্য বলা হয়েছে। তারা এখানে আসলে তাদের মেয়ে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত কুমার সরকার বলেন, বিষয়টি আমি জানিনা, এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।