দয়ারাম রায় (নিজস্ব) প্রতিবেদক ঃ

৭১’এর স্বাধিনতা যুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষন “প্রতিটি ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল, যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রæর মোকাবেলা করতে হবে” বঙ্গবন্ধুর এই আহবানে সাড়া দিয়ে অগ্নিমন্ত্রে দ্বিক্ষিত হয়ে স্বাধিনতা যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে শিশু কিশোরা। ৭১ এর ২৫ মার্চ গভীর রাতে “অপারেশন সার্চ” লাইটের মাধ্যমে অতর্কিত পাক হানাদার বাহিনী সাধারন জনগনের উপর হামলা চালালে ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইনের পুলিশেরা কেউ কেউ অস্ত্র হাতে নিয়ে আবার কেউ জান বাঁচাতে পুলিশ ক্যাম্প থেকে সরে পড়ে। অপর দিকে ইপিআর সদস্যরা ক্যাম্প ত্যাগ করে অনেকে অস্ত্র নিয়ে, কেউ অস্ত্র ফেলে রেখে গ্রামে ঢুকে পড়ে তারা কিশোর যুবকদের অস্ত্র দিয়ে ট্রেনিং দেওয়া শুরু করেন। অপর দিকে পাক হানাদার বাহিনীর দেশব্যাপি জ্বাঁলাও পোড়াও শুরু হলে মানুষ দলে দলে ভারতে আশ্রয় গ্রহন করে। এর পরে মুক্তিফৌজ গঠন করা হলে কিশোর যুবকেরা দেশ স্বাধীনের জন্য মুক্তিফৌজে যোগ দেওয়া শুরু করেন। কয়েক ভাগে ট্রেনিং শেষ করে তারা প্রথমে গেরিলা বাহিনী হিসেবে পরে সরাসরি পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন। তারা অস্ত্র শস্ত্র গ্রেনেড বোমা সহ সাবেক পূর্ব পাকিস্থান বর্তমান বাংলাদেশের অভ্যন্তরে রাতের আধারে গেরিলা বাহিনীর সদস্যরা প্রবেশ করলে এদেশে ট্রেনিং নেওয়া মুক্তিযোদ্ধারা তাদের সাদরে গ্রহন করে আশ্রয় খাদ্য অস্ত্র রাখা, পরিবহন, অনুসন্ধানী কাজ এবং যারা এদেশে ট্রেনিং প্রাপ্ত তারা সরাসরি গেরিলাদের সঙ্গে যুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন, তাদের অনেকে যুদ্ধে গিয়ে অনেকে আর ফিরে আসেন নাই আবার কেউ পঙ্গত্ব জীবন যাপনও করছেন। তারা বিভিন্ন কাজে য্দ্ধু ফিল্ডে ভূমিকা রাখেন। আজ দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও এদেশে যুদ্ধ করা মুক্তিযোদ্ধারা ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে যেতে চলেছে। আজ তারা তাদের মুক্তিযোদ্ধা সনদ না থাকায় তারা নিজেরাই সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সংগঠিত হওয়ার জন্য একটি সংগঠন দ্বার করিয়েছেন তার নাম দেওয়া হয়েছে ৭১’ এর সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ। তাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় কমিটিতে ভাতা প্রাপ্ত ৯জন মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন এবং তারা তাদের হাজারো বীরমুক্তিযোদ্ধার মত অবদানের কথা স্বীকার করে গত ২৩/০৭/২০২৩ ইং তাদেরই একজন সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা শেখ জামাল প্রধানমন্ত্রী দপ্তরে সহযোগী মুক্তিযোদ্ধাদের স্বীকৃতি প্রদানের জন্য জোর দাবী জানিয়েছেন। তিনি তার আবেদন পত্রে উল্লেখ্য করেন সহযোগী মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের পূর্ণাঙ্গ রুপে সহযোগীতা করেছেন বলে অতি তারাতারি ৯ মাসে দেশ স্বাধীন হয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সু-দৃষ্টি দেওয়ার আহবান জানিয়েছেন। অপর দিকে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক মোস্তফা ফরাজীর সঙ্গে মুঠো ফোনে এ ব্যাপারে কথা হলে তিনি জানান, যাদের ভারতে ট্রেনিং এর সনদ ও এদেশে থেকে মুক্তিযোদ্ধা সনদ সংগ্রহ করতে পেরেছেন তারাই শুধু মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেয়েছেন। আর যারা এদেশে ট্রেনিং নিয়েছেন যুদ্ধ করেছেন তাদের ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে যেতে বসেছে। অনেকে দুঃখ করে বলেন ৭১’এর-৭ই মার্চের অগ্নি মন্ত্রদাতা বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে তারা আজ ইতিহাস থেকে মুছে যেত না। আজ শুধু একমাত্র পারেন ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে দিতে তারই উত্তর সূরী আজকের ডিজিটাল বাংলার রুপকার, উন্নয়নের কান্ডারী, বিশ্বনন্দীত নেতা, জননেত্রী শেখ হাসিনার মুখ পানে চেয়ে আছেন তারা এবং সারা দেশে তাদের ৬০ লক্ষ সদস্য শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা রাখছেন। তারা তাদের শপথ বাক্য পাঠ করে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে ঐক্য থাকার জন্য গ্রাম শহরে বলিষ্ট ভূমিকা রেখে চলেছেন ৭১ এর সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের নেতৃবৃন্দরা জানান।