ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদল নেতাকর্মী ও সাংবাদিকদের ওপর সন্ত্রাসীদের হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে সাদা দল সমর্থক শিক্ষকরা বিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, গতকাল সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসি এলাকায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাকর্মী ও সাংবাদিকদের ওপর ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসীদের ন্যাক্কারজনক হামলা ও এতে তিন জন সাংবাদিকসহ ২০ জনেরও অধিক ছাত্রদলের নেতাকর্মীর আহত হওয়ার ঘটনার আমরা তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয় গণতন্ত্রের সুতিকাগার, মুক্তবুদ্ধি চর্চা ও লালনের কেন্দ্র। এখানে ছাত্র-শিক্ষকসহ সকল ছাত্র সংগঠন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন স্বাধীনভাবে তাদের মত প্রকাশ করবে, কার্যক্রম চালাবে এটাই প্রত্যাশিত এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যও তাই। কিন্তু আমরা অত্যন্ত পরিতাপের সাথে লক্ষ্য করছি যে, জাতীয় রাজনীতিতে যেমন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়েছে, তেমনি করা হয়েছে আমাদের প্রিয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিনষ্ট করে একটি কর্তৃত্ববাদী পরিবেশ কায়েম করা হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সমর্থক ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেদের একক আধিপত্য বজায় রাখার অশুভ মানসিকতা নিয়ে প্রতিনিয়তই ভিন্নমতের রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের ছাত্রদের ওপর হামলা ও নির্যাতন চালাচ্ছে। ছাত্রদল নেতাকর্মী ও সাংবাদিকদের ওপর গতকালের হামলা ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের ধারাবাহিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডেরই বহিঃপ্রকাশ।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রসঙ্গ টেনে বলা হয়, মাননীয় উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো একটি বিশেষ ছাত্র সংগঠনের নয়, বরং দল-মত নির্বিশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের অভিভাবক। তাই সকল শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংগঠনের নিরাপত্তা, তাদের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ ও কর্মকাণ্ড পরিচালনার পরিবেশ নিশ্চিত করা প্রশাসনের দায়িত্ব। কিন্তু আমরা দুঃখের সাথে লক্ষ্য করছি যে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছেন না।
এমনকি একটি বিশেষ ছাত্রসংগঠনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এক ধরনের পরোক্ষ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।
হামলার ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের শাস্তির দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, গতকালের ছাত্রদল নেতাকর্মী ও সাংবাদিকদের ওপর হামলায় জড়িত ও চিহ্নিত ছাত্র নামধারী সন্ত্রাসীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। একই সাথে বিশ্ববিদ্যলয়ে যেন সকল দল-মতের শিক্ষার্থী ও সংগঠন নির্বিঘ্নে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারে, সে পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্যও কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা হামলার শিকার হন। এতে সাংবাদিকসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। ঢাবির হাকিম চত্বর, দোয়েল চত্বর ও টিএসসিতে কয়েক দফা হামলার ঘটনা ঘটে। এ হামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে ছাত্রদল। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সনজিত। আহতদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।