আহমাদুর রহমান শাওন, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি॥ চট্টগ্রাম নগরীতে একটি সংঘবদ্ধ চক্র নকল বিদেশী মদ তৈরি করে বিক্রি করে আসছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। চক্রটি বন্দরনগরীর বিভিন্ন হোটেল, বার ও কাব থেকে বিদেশি মদের খালি বোতল সংগ্রহ করে সেই বোতলে পানি, স্পিরিট, কোক, রং ও ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে বিষাক্ত মদ তৈরি করছে। এ মদ পান করলে মারা যাবেন যেকোনও ব্যক্তি, হতে পারেন বিকলাঙ্গও। বুধবার নকল মদ তৈরি চক্রের এক সদস্য ও তাদের চার সহযোগীকে গ্রেফতারের পর সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেফতার পাঁচজন হলো- মো. নাছিম উদ্দিন (২৩), মো. ইকরামুল হক (৩২), স্বপন পাল (৫১), মো. ইমরান ফয়সাল (২১) ও জাহেদুর রহমান আরজু (৩০)। তাদের কাছ থেকে স্পিরিট, নকল লেবেল, ভেজাল মদ তৈরির বিভিন্ন ক্যামিকেল ও বোতলের কর্ক জব্দ করা হয় বলে জানায় পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৪ আগস্ট আকবরশাহ থানাধীন মালিপাড়া এলাকায় ভেজাল মদপানে বিশ্বজিত মল্লিক, শাওন মজুমদার জুয়েল ও উজ্জ্বল বণিক নামের তিন যুবকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনার বিস্তারিত তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, গত ১৩ আগস্ট বিশ্বজিতকে দেড় হাজার টাকার বিনিময়ে মদ সরবরাহ করে নাছিম, যে মদ পান করে তিনজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। নাছিমসহ আরো কয়েকজনের চট্টগ্রাম শহরে একটি সংঘবদ্ধ চক্র রয়েছে, যারা বিদেশী বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল মদ তৈরী করে বিক্রি করে আসছে। তদন্তের ধারাবাহিকতায় চক্রের সদস্য নাছিম উদ্দিন (২৩), ইকরামুল হক (৩২) ও স্বপন পালকে (৫১) চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে তথ্য দেন সিএমপি’র উপ-কমিশনার (পশ্চিম) ফারুক উল হক। পুলিশ কর্মকর্তা ফারুক উল হক দামপাড়া পুলিশ লাইন্স-এ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নাছিমকে জিজ্ঞাসাবাদে নকল মদ তৈরি সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া যায়। তার দেয়া তথ্যে নকল মদ তৈরি প্র্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত চারজনকে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে রয়েছে স্পিরিট বিক্রেতা, মদের নকল লেবেল প্রস্তুতকারক ও ছাপাখানার লোক। তিনি আরো জানান, এক বোতল নকল মদ তৈরিতে খরচ হয় মাত্র ২০০ টাকা। বোতলগুলো এমনভাবে প্যাকেট করা হয়, যাতে বোঝার উপায় থাকে না- এটি নকল নাকি আসল। এক বোতল নকল মদ তারা ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে। মূলত অধিক লাভের আশায় তারা এসব কাজ করে আসছে বলে পুলিশকে জানিয়েছে। এ চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্য সদস্যদের তথ্যও পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। সংবাদ সম্মেলনে সিএমপি’র উপ-কমিশনার (সিটি এসবি) মোহাম্মদ আবদুল ওয়ারীশ, পাহাড়তলী জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার পংকজ বড়ুয়া, আকবরশাহ থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও অভিযান পরিচালনা টিমের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।